May 14, 2025, 7:17 pm
আমতলী ৫০ শয্যার হাসপাতাল
বিপ্লবী ডেস্ক ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মাত্র দুইজন ডাক্তার দিয়ে চলছে আমতলী উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৩১টি পদের মধ্যে মাত্র ২জন চিকিৎসক রয়েছে। ২৯টি চিকিৎসকের পদ শুন্য থাকায় উপজেলায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় ২জন চিকিৎসক কোনই কাজে আসছে না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলা সদরে ৫০ শয্যায় হাসপাতাল ১টি, কুকুয়া ইউনিয়নের আজিমপুর বাজারে ১০ শয্যার হাসপাতাল ১টি, এবং আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বাজারে ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী বাজারে ১টি করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হলদিয়া ইউনিয়নের সেনের হাটে ১ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এসকল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মোট ৩১ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। চিকিৎসক সংকটের কারনে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। আমতলী হাসপাতালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ডা. ফায়জুর রহমান নামে একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার যোগদান করেন। যোগদানের পর ওই দিন বিকেল থেকেই এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন।
কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারন জানতে চেয়ে তাকে পাঁচ বার কারন দর্শাও নোটিশ দেওয়াসহ তার বেতন ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি কারন দর্শাও নোটিশের জবাব দেননি। এমনকি তিনি কোথায় আছেন তাও জানা যায়নি। আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ডাক্তর রোকনুজ্জামান ও ৬নম্বর কক্ষে ইউনানী চিকিৎসক মো. মাসুম তাদের সাধ্যের মধ্যে চিকিৎসা শেবা দিয়ে যাচ্ছেন রোগীদের। প্রতিদিন শত শত রোগী শামলাতে হিসিম খেতে হচ্ছে তাদের। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার অফিসিয়াল ও প্রশাসনিক কাজের জন্য সব সময় ব্যস্ত থাকেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান সহকারী,ক্যাশিয়ার, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিকের ১টি পদ, পরিসংখ্যানবিদেও ১টি পদ, মেডিকেল টেকনোলজিষ্টের (ল্যাব) ১টি পদ, ম্যাডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ডেন্টাল) ১টি পদ, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ফিজিওথেরাপি) ১টি পদ, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ৪ জন, কার্ডিও গ্রাফার ৪ জন, ষ্টোর কিপার ১জন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৭ জন, স্বাস্থ্য সহকারী ২৬ জন, ড্রাইভার ১জন, জুনিয়র মেকানিক ১জন। তৃতীয় শ্রেণির ওয়ার্ডবয়, আয়া, মালী, বাবুর্চি নিরাপত্তা প্রহরী এবং পরিচ্ছন্নতাকার্মীসহ ৮৮ পদের মধ্যে ৫২টি পদ খালি এবং চতুর্থ শ্রেণির ৩৪টি পদের মধ্যে ১৬টি পদ খালি রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এসকল পদ খালি থাকায় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাত্তায় মারাত্মতক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অন্যান্য পদের কর্মচারী না থাকায় হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজেও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: চিন্ময় হাওলাদার জানান, চিকিৎসক সংকট থাকায় জরুরী বিভাগ ওয়ার্ডসহ নানা দিক সামলাতে হিমসিম খাচ্ছি। স্যাকমো, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট দিয়ে জরুরী বিভাগ সামলাচ্ছি। তিনি আরো বলেন ডাক্তার সংকটের কথা জানিয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে এবং জরুরী ভিত্তিতে চাওয়া হয়েছে। চিকিৎসক পাওয়া গেলে আশা করি এ সংকট থাকবে না। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. আবুল ফাত্তাহ বলেন, আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কথা স্বাস্থ্য মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে এবং জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দুরের চিকিৎসকদের এ অঞ্চলে পদায়ন করা হলে তারা এখানে এসে থাকতে চায় না তাই নিজ উপজেলার চিকিৎসকদের পদায়ন করলে এ অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।
Leave a Reply