November 23, 2024, 8:03 am
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সুবক্তা হিসেবে বরাবরই তার খ্যাতি। ছাত্রজীবন থেকেই পরিচিত সজ্জন আর মিষ্টভাষী
হিসেবেও। বিএনপির নেতা জহির উদ্দিন স্বপন অনায়াসে মিশে যেতে পারেন যে কারোর সাথে। দলীয়
রাজনীতিতে কখনো এগিয়ে থেকেছেন আবার কখনো অকারণে তাকে কোণঠাসা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তি
স্বপন সব সময় একটা গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই নানাভাবে টিকে থেকেছেন তার স্বভাবজাত ভদ্র-মিষ্ট
আচরণের কারণে। বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষমতার প্রভাব-বলয়ের মধ্যে
থাকলেও খুব বেশি ক্ষমতাচর্চা তিনি করেছেন এমন অভিযোগ নেই। তবু রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন
সময় পিছিয়ে পড়েছেন। বিএনপির নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কি দলীয় রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন?
বিএনপির ভেতরে ও বাইরে এমন আলোচনা আছে যে, দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে নব্বইয়ের গণ-অভ্যুথানের
অন্যতম ছাত্রনেতা জহির উদ্দিন স্বপনের কদর বেড়েছে। অতীতে নিজ কর্মে যতটা না পিছিয়ে পড়েছেন স্বপন,
তার চেয়ে অনেক বেশি কতিপয় সহকর্মীর ঈর্ষার মুখে পড়েছেন, এমনটাই বলেছেন বিএনপির তৃণমূল
স্তরের নেতা-কর্মীরা। রাজনৈতিক বিতর্ক, কথা, কাজ আর জনসংযোগে পারদর্শী স্বপন এখন বিএনপির
মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক। তার সদস্য সচিব বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
এমন সময়ে স্বপনকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো, যখন রাজনৈতিক মাঠের চেয়ে মিডিয়াতেই উপস্থিতি
বেশি দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলটির। দায়িত্বকে কীভাবে দেখছেন জহির উদ্দিন স্বপন? একান্তে আলাপকালে
তিনি বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আমার ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস রেখেছেন। আমি সব সময়ই দলের
একজন অনুগত সৈনিক। দলীয় নেতৃত্বের আস্থার মর্যাদা দিয়েই শতভাগ নিজেকে উজাড় করে আমার ও আমার
টিমের দায়িত্ব পালন করব।’ প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে সতর্ক স্বপন দলের কর্মকা- নিয়ে প্রকাশ্য হচ্ছেন
অনেক দিন পর, এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু নতুন এই দায়িত্ব পাওয়ার অনেক আগে থেকেই নীরবে-
নিভৃতে বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দেওয়া নানা গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট পালন করছেন। তাই তার
মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হওয়াটা বিএনপির রাজনীতিতে মোটেই কাকতালীয় কিছু নয়। আকস্মিক তো
নয়ই। বরং এটি অনিবার্যই ছিল- জহির উদ্দিন স্বপন নতুন কোনো দায়িত্ব পাচ্ছেন। কীভাবে নিজেকে
মেলে ধরবেন স্বপন? কাজ কী হবে? অনেক প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা বিএনপিতে, বাইরেও। অত্যন্ত সম্ভাবনাময়
একজন রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে বিভিন্ন সময় অবিচার হয়েছে, এমন কানাঘুষা বিএনপির রাজনীতিতে
প্রতিনিয়ত হয়। কিন্তু বিষয়টি আমলে নিতে চান না বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন
স্বপন। স্বপন বলেন, ‘দলের নীতিনির্ধারকরা দলের প্রয়োজনে একেক সময় একেকজনকে এক-একটা দায়িত্ব
দেবেন, এটাই নিয়ম। এখানে সুবিচার-অবিচারের বিষয় নেই। দলের অনুগত সৈনিকরা নীতিনির্ধারকদের
দেওয়া দায়িত্ব পালন করবেন, এটাই একজন অনুগত সৈনিকের কাজ।’ তবে কি দুবার মনোনয়নবঞ্চিত,
কেন্দ্রীয় কমিটিতে নাম না থাকাটা স্বাভাবিকই ছিল জহির উদ্দিন স্বপনের কাছে? স্বপন বলেন, ‘এমপি বা
পদ-পদবির জন্য রাজনীতি কখনো করি না, করিনি। রাজনীতি করি আদর্শের কারণে। মানুষের জন্য কাজ করতে
পারাটাই বড় কথা। দল যখন যাকে যে পদের জন্য যোগ্য মনে করবে সেটা মেনে কাজ করাটাই একজন
শৃঙ্খলাপরায়ণ রাজনৈতিক কর্মীর কাজ। বিএনপির মিডিয়া বিষয়ক সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন কি
ফের স্বমহিমায়? সময়ই বলে দেবে সব। রাজনীতিতে কি শেষ কথা বলে কিছু আছে! বিএনপির রাজনীতি
পর্যবেক্ষণ করেন এমন অনেকেই বলছেন, মিডিয়া সেল গঠন অনিবার্যই ছিল। কর্মে তারা এর স্বাক্ষর
কতখানি রাখবেন- এখন এটার জন্য অপেক্ষা।
Leave a Reply