June 1, 2025, 12:53 am
বিপ্লবী ডেস্ক ॥ পিরোজপুরে ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতাল চালু করতে ৯ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয় প্রায় দেড় বছর আগে। কিন্তু বিদ্যুতের সংযোগ এখনো দেওয়া হয়নি এবং বসেনি লিফট। এতে করে পুরোনো ভবনে ১০০ শয্যা নিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। সেখানে অধিকাংশ সময় রোগী ভর্তি থাকে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ। শয্যা না পেয়ে রোগীদের থাকতে হচ্ছে মেঝে ও বারান্দায়। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনেরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৩১ শয্যা নিয়ে যাত্রা করা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সালে নতুন ভবনে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০০৫ সালে একে ১০০ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে সরকার তা বাড়িয়ে ২৫০ শয্যা করার ঘোষণা দেয়। সে অনুযায়ী পিরোজপুর গণপূর্ত বিভাগ দরপত্র আহ্বান করে সাততলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করে। পরে ভবন সম্প্রসারণ করে বাড়ানো হয় আরও দুই তলা। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তিন দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয় কাজ। মেসার্স খান বিল্ডার্স ও বঙ্গ বিল্ডার্স লিমিটেড নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি করে। কিন্তু এখনো ভবনটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ভবনে পুরো হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বর্তমানে পুরোনো ভবনে প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। তাদের মধ্যে ভর্তি হওয়া রোগীদের অনেকে শয্যা পাচ্ছে না।
ভর্তি রোগী রোকেয়া ঝরনা বলেন, ‘বেড না পেয়ে মেঝেতে পড়ে আছি। রোগীর অনেক চাপ, তাই বেড দিতে পারছে না। নতুন হাসপাতালটি চালু হওয়া অনেক জরুরি। বছরের পর বছর গেলেও হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না। মনে হয় দেখার কেউ নেই।’ এ নিয়ে কথা হলে স্থানীয় বাসিন্দা মাহাবুব মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালের কাজ চলছে তো চলছে। কবে শেষ হবে জানি না। জেলার ১৫ লাখের বেশি বাসিন্দার জন্য হাসপাতালটি চালু করা অতি জরুরি। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আর কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা হোক।’ এদিকে শুধু শয্যা নয়, চিকিৎসক-সংকটেও ভুগছে হাসপাতালটি। এক রোগীর স্বজন খোকন মিয়া বলেন, ‘ডাক্তার নেই, সিট নেই বলে রোগী পাঠিয়ে দেয় বরিশাল-খুলনায়। চোখের ডাক্তার নেই, কার্ডিওলজির ডাক্তার নেই, অর্থোপেডিক ডাক্তার নেই, নিউরোলজির ডাক্তার নেই।
নতুন হাসপাতাল চালু হলে চিকিৎসক-সংকট কাটবে এবং রোগীদের ভোগান্তি কমবে বলে আশা করি।’ এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসে হাজারের বেশি রোগী। আমাদের চিকিৎসক-সংকট রয়েছে। ডাক্তার-নার্সরা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। নতুন হাসপাতালটি দ্রুত চালু হলে সেবার মান আরও বাড়বে এবং ভোগান্তি কমবে।’ ভবন হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে পিরোজপুর গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘লিফট ও বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় হস্তান্তরে কিছুটা জটিলতা হচ্ছে। লিফটের দাম বাড়ায় পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’
Leave a Reply