December 11, 2024, 11:49 pm
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালের স্কুলগুলোতে এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। কেউ ৫টিতে, কেউ ৭টিতে, কেউ আবার সব বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সব শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষকেরা। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে নতুন করে পরীক্ষা নিয়েছে কোনো কোনো স্কুল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার গৌরনদীর পালরদী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় ২০১ জন অংশগ্রহণ করে সব বিষয়ে পাস করেছে মাত্র ৪৬ জন।
প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায় বলেন, ফেল করা শিক্ষার্থীরা এখন বিভিন্ন মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে ফরম পূরণ করছে। ফেলের হার বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে শিক্ষকদের হাতে বেত থাকত, এখন তো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোরে কথাও বলা যায় না।’
গৌরনদী উপজেলার ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯৪ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেছিল নির্বাচনী পরীক্ষায়। এর মধ্যে ৮৯ জন পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ১০টি বিষয়েও ফেল করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক এইচ এম মানিক হাসান বলেন, বিশেষ বিবেচনায় ৪৩ জনের ফরম পূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ জন্য ফেল বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের আবার পরীক্ষা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শান্ত রেখে পাঠদানে মনোযোগী করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের সম্মান দেওয়ার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা মনে হয় ভুলেই গেছে।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের তথ্যমতে, সর্বোচ্চ ৪ বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণে সুযোগ দিতে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা আছে। আরও বেশি বিষয়ে ফেল করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফরম পূরণে যোগ্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হ্রাস পেয়েছে।
শিক্ষকেরা বলেন, কয়েক বছরে এসএসসি পরীক্ষায় লাগামহীন পাসের হার বৃদ্ধি দেখানো, মোবাইল ফোনকেন্দ্রিক সামাজিক অবক্ষয় এবং শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠার ভয়ানক কুফলের প্রভাব পড়েছে এবারের এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায়।
ঝালকাঠীর সুগন্ধিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি ব্যাপারী জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৪৬ জন নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ১৪ জন সব বিষয়ে পাস করেছে। আবার পরীক্ষা নিয়ে ৩৫ শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় ঢালাওভাবে ফেল করলে চলবে না। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের এ বিষয়ে তদারকি করতে হবে। তিনি বলেন, ছাত্রদের ক্লাসে ফেরানোর দায়িত্ব শিক্ষকদের। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply