July 11, 2025, 8:20 am
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালের বাকেরগঞ্জের চরাদি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনে বিতর্কিত ভোটার তালিকা ও বহুদলীয় স্বপন পাহোলান’র প্রার্থীতা বাতিলের দাবী জানিয়ে কাউন্সিল ও ভোট বর্জন করেছে তিন সভাপতি পদপ্রার্থী।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার চরাদি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের হলতা বোর্ড স্কুল সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি ঘোষণা দেয়া হয়।
ভোট বর্জন করা তিন সভাপতি প্রার্থীরা হলেন, ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সদস্য মোঃ খলিল পাহোলান, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস শিকদার ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মশিউর রহমান হাওলাদার।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ২ নং চরাদী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনে স্বপন পাহোলান কমিটি গঠনের ভোটার তালিকায় আওতাভুক্ত হয়ে নিজেকে সভাপতি প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষনা দেয়।
এর পূর্বে ওয়ার্ড বিএনপি’র কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে করার জন্য বিএনপির সিনিয়র নেতারা ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ভোটার তালিকা ঘোষণা করেন। যার মধ্যে ৪০ এর অধিক ভোটার আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির সরাসরি কর্মী ও সমর্থক।
ওই তিন সভাপতি প্রার্থীদের অভিযোগ, স্বপন পাহোলানকে সভাপতি করতে তাদের-পক্ষের লোকদের এই কাউন্সিলে ভোটার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, স্বপন পাহোলান ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনী আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারনায় সরাসরি অংশগ্রহন ও ভোট প্রদান করেছে।
তারা বলেন, ৫ আগস্ট এর পরে একটি স্বার্থন্বেষী মহল ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের আশায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও ভোটের সাথে সম্পৃক্ত থাকা স্বপন পাহোলানকে সভাপতি প্রার্থী করেছে। এরা দলের ক্ষতির পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করেছে। তাই আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই কাউন্সিল ও ভোট বর্জন করলাম।
ওই ৩ সভাপতি প্রার্থী আরো বলেন, বিতর্কিত স্বপন পাহোলানের পদ বাতিলের দাবিতে আমরা গত ৬ জুলাই বরিশাল জেলার দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলাম। আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা দক্ষিণের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন থানা বিএনপির কমিটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
এবিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এইস এম ফরিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন পূর্বে মোঃ খলিল পাহোলান, আক্কাস শিকদার ও মশিউর রহমান শিকদার মৌখিকভাবে স্বপন পাহোলানের আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও নির্বাচনী প্রচারণার সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি অবহিত করেছিল। আমি তাদেরকে বলেছি এসংক্রান্ত কোন প্রমাণ থাকলে আপনারা সেটা পেশ করুন। কিন্তু তারা আমাদের কাছে কোন প্রমান না দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কাউন্সিল ও ভোট বর্জন করেছে।
কয়েকজন পদ প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে কাউন্সিল ও ভোট বর্জন করেছে জানিয়ে- ইউনিয়ন বিএনপি’র কাউন্সিল কমিটির টিম প্রধান ভিপি দুলাল বলেন, যদি স্বপন পাহোলানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
স্বপন পাহোলানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন।
এ দিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে সভাপতি প্রার্থী স্বপন পাহোলান‘র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের একাংশ বিএনপি’র কমিটিতে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির কর্মী সমর্থকদের অনুপ্রবেশ এবং পকেট কমিটি গঠনের অপ-তৎপরতা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
Leave a Reply