November 24, 2024, 12:13 am

বরিশালে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৬০ টাক‍া

বরিশালে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৬০ টাক‍া

স্টাফ রিপোর্টার ‍॥ ভারতের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার। বৃহস্পতিবার জারি করা এ আদেশ শুক্রবার থেকেই কার্যকর হওয়ার খবরে বরিশালে হঠাৎ পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দিনভর ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে কেজি বিক্রি হলেও তা শুক্রবার সকল থেকে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। আকস্মিক পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্রেতা সাধারণ অস্বস্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে পেঁয়াজের এই মূল্য বৃদ্ধিতে নিম্নশ্রেণির মানুষ চিন্তায় পড়ে গেছেন।

শুক্রবার রাতে বরিশাল নগরীর পোর্টরোড বাজার ঘুরে দেখা যায়, মূল্য বাড়িয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসময় অনেক ক্রেতা অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে গেছেন।

দোকানিরা জানান, আগামী দুই মাস পার্শ্ববর্তী বন্ধু দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি করছে না। এই খবর পাওয়ার পরপরই বরিশালে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আড়ৎদাররা বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকেই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাই অতিরিক্ত মূল্যে ক্রয় করে তা খুচরা বাজারে সামান্য লাভে বিক্রি করছেন।

ক্রেতারা জানান, কেজিপ্রতি আকস্মিক ৭০ টাকা মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ায় তারা বিপদে পড়েছেন। অনেকে এক কেজি কিনতে আসলেও মূল্য বৃদ্ধির কারণে তারা আধা কেজি বা তার কম নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার পেঁয়াজের বাড়তি মূল্য শুনেই চলে হাটা শুরু করেন।

তবে ভারত সরকার আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে যে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আসছে না, বিষয়টি এমন নয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কোনো দেশের সরকারের অনুরোধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানির সুযোগ দিতে পারবে। দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) আদেশে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

এছাড়া ইতিমধ্যে যারা পেঁয়াজ আমদানির এলসি চালু করেছেন, তাদের মধ্যে যারা আদেশ জারির আগেই পণ্য জাহাজিকরণ শুরু করেছেন, তারা এর আওতামুক্ত থাকবেন। পাশাপাশি শিপিং বিল দপ্তরে জমা দিলে এবং সংশ্লিষ্ট জাহাজ বন্দরে ভিড়লে বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ধরনের চালান অনুমোদন করতে পারবে। এমনকি পেঁয়াজের চালান এই আদেশ জারির আগেই যদি ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং পণ্য বন্দরে ঢুকে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস দপ্তরের ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যায়, তখনও রপ্তানির সুযোগ থাকবে। বন্দরের এসব প্রক্রিয়ার সুবিধা বহাল থাকবে আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

বিরূপ আবহাওয়ায় ফলন ভালো না হওয়ায় এবছর ভারতের বাজারে পেঁয়াজের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। সে কারণে গত অগাস্টে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শূল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ শুরু করে ভারত।

এরপর ২৮ অক্টোবর পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রতি টন ৮০০ ডলারে বেঁধে দিয়ে আদেশ জারি করে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার জানানো হয়, ন্যূনতম রপ্তানিমূল্যের ওই সীমা আরও তিন মাস, অর্থাৎ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে। এরপর রপ্তানিই বন্ধ করার ঘোষণা আসলো।

ভারতের খুচরা বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ রুপির মধ্যে। আর বাংলাদেশে দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকদের সুরক্ষায় বাংলাদেশও বছরের অধিকাংশ সময়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে। তবে মওসুমের শেষ দিকে এসে দাম বেড়ে গেলে আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে সরকার।

চলতি বছরর জুনে পেঁয়াজের দাম কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি ৩৫ টাকা থেকে ৮০ টাকায় উঠে যাওয়ায় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © All rights reserved © 2024 DailyBiplobiBangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com