December 4, 2024, 8:27 am

বরিশালে করোনা বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধিতে অনীহা

বরিশালে করোনা বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধিতে অনীহা

  • গত ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার ৩৭. ৪২ শতাংশ
  • সাধারণ মানুষদের অসচতেনতাই দায়ী বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের

নূরুল হাসান সাক্ষর ও মেহেদী হাসান ⇒ গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই দেশে ফের উর্ধ্বমুখী করোনার সংক্রমণ। বরিশালে করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। বিভাগে গত চার দিন ধরে এই সংক্রমণের হার ওঠানামা করছে

স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে, শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত বিভাগে ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাতে সংক্রমণের হার দাড়ায় ৩৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর আগের দিন গত শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার অনেকটা কমেছিল।

তবে এত দ্রুত এবারের সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ায় পিছনের কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষদের অসচতেনতা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। রবিবার বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষই মাস্ক ছাড়াই বাজারে ও জনবহুল এলাকায় স্বাভাবিক চলাচল করছেন।

নগরের চকবাজার, বাজার রোড, সদর রোড, বাংলাবাজার, চৌমাথা, সাগরদি, রূপাতলী, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক ছাড়াই লোকজনকে দেখা গেছে। এ নিয়ে প্রশাসনেরও উল্লেখযোগ্য কোনো তদারকি চোখে পড়েনি।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বিভাগে শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ১৪ জুন একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তা ক্রমেই বাড়তে থাকে।

শুক্রবার তা একলাফে ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশে পৌঁছায়। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল। গত জানুয়ারিতে বিভাগের শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩১৭। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৮৮৪ জন এবং মার্চে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৪৪ জনের। কিন্তু এপ্রিলে তা কমে হয় মাত্র ৬ জন এবং মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩ জনে।

এ ছাড়া জুনে বিভাগে ১৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কোনো মৃত্যু ছিল না। বিভাগে এযাবৎ করোনায় মারা গেছেন ৬৯০ জন। সংক্রমণের গতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায় ৫২ জন।

এ ছাড়া ভোলায় ৩ জন, পটুয়াখালীতে ৩ জন, পিরোজপুরে ৩ জন, তবে বরগুনা ও ঝালকাঠিতে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমে অবনতি হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

এটা পরিস্থিতিকে জটিল করে দিতে পারে। এ জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে কোনো রোগীর মধ্যে এ রকম উপসর্গ থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হয়। শ্যামল কৃষ্ণ ম-ল বলেন, মাস্ক পরার ব্যাপারে এখন যেভাবে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, সেটাও আশঙ্কার বিষয়। সামনে পবিত্র কোরবানির ঈদ।

এখন গরুর বাজারগুলোয় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হবে। ঈদে অনেক লোক বাসে-লঞ্চে গ্রামে ফিরবে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার ওপর জোর দিতে হবে।

জানতে চাইলে বরিশাল জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (নেজারত) সুব্রত বিশ্বাস দাস বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য এখনো অভিযান শুরু করিনি। দুই একদিনের মধ্যেই তা শুরু হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে গত ২৯ জুন বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিদের্শনাও দেয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © All rights reserved © 2024 DailyBiplobiBangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com