October 22, 2024, 3:33 am
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আজ শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যায়ারম্যান এ.কে.এম. শাহে আলম এর মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ বগুড়ায় পুলিশ লাইনে সম্মুখযুদ্ধে বীর যোদ্ধা এ.কে.এম. শাহে আলম শহিদ হন। মৃত্যুর পর তাঁর লাশটিও খুঁজে পায়নি পরিবার। যিনি দেশমাতৃকার টানে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বীরত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সাফল্যগাথা, গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকায় ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান চিরস্মরণীয়। ১৯৪৫ সালের ১৩ই নভেম্বর বাকেরগঞ্জের আঙ্গারিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এ.কে.এম. শাহে আলম। ছোটোবেলায় নানাবাড়িতেই বড়ো হতে থাকেন। চাকরির সূত্রে বাবা তখন ঢাকায় অবস্থান করতেন। নানা ছিলেন তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট। বাবার সাথে ঢাকায় অবস্থানকালে ঢাকা পগোজ স্কুলের ছাত্র ছিলেন। এরপর বাবার চাকরির বদলিজনিত কারণে বরিশালে চলে এসে বরিশাল এ.কে. স্কুলে ভর্তি হন তিনি। বাবা ছিলেন বরিশাল কৃষি বিভাগের সুপারভাইজার। ১৯৬২ সালে এ.কে. স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরবর্তীতে বিএম কলেজে আই.সি. পাশ করার পর ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে অ্যায়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসে একবার শাহে আলম বরিশালে দুদিনের জন্য এসে কাউনিয়া ১ম গলির বাসায় ভিত্তিপ্রস্থর করে রেখে যান। সেই শেষ আসা আর শেষ দেখা মা-বাবা আর ভাইবোনের সাথে। চার ভাইবোনের মধ্যে শাহে আলম ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১-এর মার্চে শাহে আলম বিমান বাহিনীর কাজে ঢাকা থেকে বগুড়ায় যান। তখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন চলছিল। বগুড়া থেকে মায়ের কাছে লেখা একটি চিঠি, যাতে লেখা ছিল-“মা, ওরা আমাদের খাবারের রেসন বন্ধ করে দিয়েছে। হাতের ভারী অস্ত্র নিয়ে নেমেছে।” চিঠিটি এপ্রিল মাসে পরিবারের হাতে পৌঁছেছিল। শাহে আলমের বাবা কাউনিয়া ১ম গলির নিবাসী আসাদুল হক মিয়া কৃষি বিভাগে কর্মরত ছিলেন আর মা রাবেয়া বেগম একজন গৃহিণী ছিলেন। এ.কে.এম. শাহে আলম অবিবাহিত ছিলেন। শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যায়ারম্যান এ. কে. এম. শাহে আলমের দুই বোনের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা লুৎফুন্নেচ্ছা বেগম বুলবুল। আরেকজন হলেন বরিশাল বিএম কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুলতানা বেগম লিলি। অপর ভাই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জামান বাবলু। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ছোট বোন অধ্যাপক সুলতানা বেগম লিলি এর নগরীর কবি জীবনানন্দ দাশ সড়কের পেশকার বাড়িস্থ বাসভবনে দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
Leave a Reply