November 21, 2024, 6:57 am
গ্রেপ্তার ভাঙারী ব্যবসায়ী
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বন্ধুকে হত্যা করে ছিনিয়ে নেয়া ব্যাটারিচালিত রিক্সা কেনা ভাঙারী ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার তাকে নগরীর পলাশপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার ভাঙারী ব্যবসায়ী রানা গাজী (৩০) শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার চরহোগলা কার্তিকপুর গ্রামের হাসেম গাজীর ছেলে। রানা নগরীর পলাশপুর তিন নম্বর গুচ্ছ গ্রামের মজিবর চোকদারের ভাড়াটিয়া। বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ জানান, নগরীর রিফুজি কলোনীর বাসিন্দা কিশোর সোহেল ফরাজী (১৫) হত্যার ঘটনায় আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পলাশপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুল আমিনের কাছে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। রানা স্বীকার করেছে, সোহেল ফরাজীকে হত্যার পর তার ব্যাটরিচালিত রিক্সা খুলে তার কাছে ভাঙারী হিসেবে বিক্রি করেছে। ভাঙারী হিসেবে রিক্সাটি ১২ হাজার ৩শ টাকা বিক্রি করেছে। এর আগে গত ১১ জুলাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খয়রাবাদ সেতুর নিচে একটি ডোবা থেকে সোহেল ফরাজীর কংকাল উদ্ধার করা হয়। সোহেল রিফুজি কলোনী এলাকার বাসিন্দা রিক্সাচালক ফরিদ ফরাজীর ছেলে।তাকে হত্যা ও কংকালের তথ্য দেয়া বন্ধু ইমরান খান (১৫) একই এলাকার বাসিন্দা নান্না খানের ছেলে। ইমরান হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সোহেল ফরাজীর মা মুকুল বেগম বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলা করেছে। মামলায় ইমরানসহ চারজনকে আসামী করেছে। অপর তিনজন হলো- নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোড মিয়া বাড়ী এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে বাপ্পি, সদর উপজেলার কাগাশুরা গ্রামের মৃত জয়নাল হোসেনের ছেলে রাকিব হোসেন ও বাটনা গ্রামের মো. শাহিনের ছেলে হৃদয়। তারা পলাতক রয়েছে। সোহেল ফরাজীর ভাই সোহাগ ফরাজী জানান, ভাই সোহেল ফরাজী ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। চালক বিদেশে চলে যাওয়ায় বেকার ছিলো। দুই মাস পূর্বে ১০ মে সকালে তার ভাইকে ডেকে নেয় বন্ধু ইমরান। তখন ভাই সোহেল বাবার ভাড়ায় চালিত ব্যাটারি রিক্সা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি দুই মাস ধরে বন্ধু ইমরানও নিখোঁজ ছিলো। স্থানীয়রদের মাধ্যমে ইমরানের পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করে। গত ১০ জুলাই ইমরান আত্মগোপনে থেকে ফিরে আসে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে তাকে একটি রুমের মধ্যে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে তাকে কোতয়ালী মডেল থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে সোহেলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তখন বিষয়টি বন্দর থানায় জানানো হয়। বন্দর থানা পুলিশ ইমরানকে নিয়ে খয়রাবাদ সেতুর নিচে ইমরানের দেখানো স্থান থেকে কংকালের সন্ধান মিলেছে। আটক ইমরান জানায়, সোহেলের ব্যাটারিচালিত রিক্সা নেয়ার জন্য পরিকল্পনা করে সাথে থাকা অপর তিন বন্ধু হৃদয়, বাপ্পি ও রাকিব। পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর লাকুটিয়া সড়কের একটি দোকান থেকে ঘুমের ঔষধ কেনা হয়। পরে কীর্তনখোলা নদীর উপর সেতুতে ঘুমের ঔষধ গুড়ো করে এনাজিং ড্রিঙ্কসের মতো মেশানো হয়। সেখান থেকে চারজন খয়রাবাদ সেতুর নিচে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘুমের ঔষধ মেশানো এনার্জি ড্রিঙ্কস সেবন করানো হয়। এতে সোহেল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন গামছা দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে পাশের একটি ডোবায় ফেলে দেয়।
Leave a Reply